জিএম সালমান মোস্তফা : কথিত ডাক্তার এইচ এম জিয়াউর রহমান জিয়া। যশোরের কেশবপুর বাজারে মডার্ণ ক্লিনিকের সামনে কখনো এলোপ্যাথিক, কখনো আয়ুর্বেদিক আবার কখনো কবিরাজ সেজে চিকিৎসা করছেন। এক কথায় তিনি সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ।দীর্ঘদিন ধরে তিনি কেশবপুর বাজারে জিয়া ফার্মেসিতে সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ সেজে রোগী দেখছেন। নিজের ভিজিটিং কার্ডে ব্যবহার করছেন ডাক্তার এইচ এম জিয়াউর রহমান জিয়া, ডিপ্লমা ইন মেডিকেল ফ্যাকালটি ও ফার্মাসিস্ট। শিশু রোগের ওপর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এখানে শিশুদের নেবুলাইজার করা হয়। পুরাতন আমাশয়, প্যারালাইসিস, নখের কুনি ও ঘাঁ-পাঁচড়া রোগের চিকিৎসা করা হয়। বিনা অপারেশনে নাকের পলিপস এবং জ্বীনের তদবির করা হয়।সূত্র জানায়, প্রতিদিন জিয়া ফার্মেসিতে তিনি ডাক্তার সেজে রোগী দেখছেন। বিশেষ করে তিনি শিশু রোগী দেখে থাকেন। তার চেম্বারে আসলে কোনো রোগী ফেরত যায়না। রোগীকে প্রথমে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা দেন। তাতে কাজ না হলে দেয়া হয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা। বিনা অপারেশনে নাকের পলিপসের চিকিৎসাও পারদর্শি তিনি। নাকের মাংস বেড়ে যাওয়া রোগীদের তিন দফা অ্যাসিড প্রয়োগ করে বাড়তি মাংস কেটে ফেলছেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে আসছেন তিনি।শুধু তাই নয়, নিজের ফার্মেসিতে বসে কবিরাজি চিকিৎসাও করান তিনি। প্রেমে রাজি করানো, স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য দূর করা, স্বামীকে বশ করাসহ নানা বাহানায় তিনি মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতাচ্ছেন।বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১০ (২০, ডিসেম্বর ২০১০-এ প্রকাশিত গেজেট) এর ধারা ২২ (১) ও ২৯(১) এর আওতায় বলা হয়েছে, নূন্যতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যতিত অন্য কেউ তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবি লিখতে পারবেন না। তাও আবার তাকে বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশনভূক্ত হতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তি এ ধারা লঙ্ঘন করলে তিন বছরের কারাদন্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।কথিত ডাক্তার জিয়া জানান, তিনি মূলত ফার্মাসিস্ট। ঢাকার একটি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি সাত দিনের শিশুরোগের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এজন্য শিশু রোগী দেখেন। ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকালটি পাশ করায় তিনি নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করছেন। মাঝেমধ্যে মানুষের উপকার করতে একটু কবিরাজিও করেন। সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানান, ভুয়া ডাক্তারদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।