উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি।। নড়াইল সদর উপজেলায় করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষের জন্য সরকারের আড়াই হাজার টাকার নগদ সহায়তা তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যক্তিই পাননি।
রোজার ঈদের আগে ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। দীর্ঘদিন পার হলেও সহায়তা না পেয়ে এখন অনেকের আশংকা, তারা আদৌ কিছু পাবেন কিনা!
সম্প্রতি আউড়িয়া ইউনিয়নের তালিকাভুক্তরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তাদের মোবাইল নম্বর সঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি আবেদনও করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ৫০ হাজার গরিবকে সরকারিভাবে নগদ অর্থ সহায়তা প্যাকেজের আওতায় আনা হয়। এদের প্রত্যেককে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। এর মধ্যে সদরে ১৮ হাজার ৯০০ জন তালিকাভুক্ত হয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, মোবাইল নম্বরসহ ২৪টি তথ্য সংযুক্তির মধ্য দিয়ে তালিকা করা হয়েছে। তালিকাভুক্তদের মোবাইলে এসএমএস করা হবে এবং বিকাশের মাধ্যমে এ অর্থ প্রত্যেকের মোবাইলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অধিকাংশ উপকারভোগীর মোবাইলে এ টাকা আসেনি।
আউড়িয়া ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বাশার মণ্ডল জানান, এ ইউনিয়নে এক হাজার ৬৪৯ জন উপকারভোগীর নামের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে তার ওয়ার্ডে ১৯০ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৪ জন অর্থ পেয়েছেন।
‘শুনেছি তালিকাভুক্তরা কেউ কেউ অন্য ব্যক্তির ফোন নম্বর বা ভুল নম্বর দিয়েছে। এছাড়া তালিকাভুক্তদের মোবাইল সিমটি অন্য কারও নামে নেওয়া। এনআইডি নম্বরের সাথে মোবাইল সিমের অমিল হওয়ায় এমনটি হতে পারে।’
আউড়িয়া গ্রামের তালিকাভুক্ত মো. আজিবর শেখ, মো. জাফর সিকদার, হরেনকুমার সরকার, রামপ্রসাদ বিশ্বাস জানান, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য ঠিকঠাক থাকলেও তারা এখনো টাকা পাননি। এ কারণে গত ১১ জুন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মোবাইল নম্বর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে।
ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোশারফ শেখ বলেন, তার ইউনিয়নে এক হাজার ২৪২ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশ’ জন টাকা পেয়েছেন। স্থানীয় মেম্বার ও চৌকিদার দিয়ে তিন বার তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তার ইউনিয়নে মাত্র একজনের নামের তালিকা ভুল ছিল। বাকি সবার তথ্য ঠিক রয়েছে।
নড়াইল পৌরসভার ছয় নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শরফুল আলম লিটু জানান, তার ওয়ার্ডে ৪০৯ জন তালিকাভুক্ত ব্যক্তির মধ্যে এ পর্যন্ত টাকা পেয়েছেন ২০-২২ জন। গত রোজার ঈদের আগেই এসব মানুষের অর্থ সহায়তা পাওয়ার কথা। আর ক’দিন পরেই কুরবানি ঈদ।
এই ব্যাপারে জেলা ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চণ্ডি৩বরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আজিজ ভূঁইয়াকে একাধিকবার ফোন করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম বলেন, তালিকাভুক্ত যাদের তথ্য সঠিক রয়েছে, তারা সিরিয়ালি অর্থ পাচ্ছেন। কারও ফোন নম্বর না থাকলে বা কোনো সমস্যা হলে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে।
এ পর্যন্ত কতজন অর্থ পেয়েছেন?- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, যেহেতু বিভিন্ন ধাপে ধাপে এ অর্থ আসছে সেজন্য নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব না।
আউড়িয়া গ্রামের দরখাস্তকারীদের ব্যাপারে এই চেয়ারম্যান বলেন, যদি কারও নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকে শুধু তাদের দরখাস্ত করতে বলা হয়েছে।