কিশোর কুমার দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নে টিসিবির উপকারভোগীদের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। কার্ডধারীদের মধ্যে উপ-সচিবের বাবা, ব্যবসায়ী, জমি ও ভবন মালিকের নাম রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনিয়নে ৯২৫ জন টিসিবির উপকার ভোগীদের তালিকা স্থান পেয়েছেন। এদের মধ্যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর ভানুবিল গ্রামের বাসিন্দা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব প্রদীপ কুমার সিংহের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা কৃষ্ণ কুমার সিংহের নাম রয়েছে। তার পাকা বাড়ি, গাড়ি ও জমিজমা আছে। প্রথম কিস্তির পণ্য নিয়েছেনও তিনি।
একইভাবে টিভি শোরুমের মালিক, ব্যবসায়ী, জমির মালিক, ভবনের মালিক, প্রবাস ফেরত ব্যক্তি ইউপি সদস্যদের বাবা, ছেলে, বোনসহ সচ্ছল আত্মীয়-স্বজনের নামও তালিকায় রয়েছে।
তালিকায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুরের ছেলে ধান ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, তার বাবা জহুর উল্যা ও ভাই এরফান আলীর নাম রয়েছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল আজিমের ছেলে ফাহাদ আলী, মেয়ের জামাই জুবের মিয়া ও বোন সাহেদা আক্তার এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাজী আলমগীর ফারুক সচ্ছল হয়েও ছেলে শামসুল আলম শুভর নাম দিয়েছেন তালিকায়। সংরক্ষিত নারী সদস্য গুলনাহার বেগমের ভাই ও স্বজনদের নামও রয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আরও অর্ধশতাধিক সচ্ছল ব্যক্তির নাম রয়েছে তালিকায় যারা বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
এ বিষয়ে উপকারভোগী উপ-সচিবের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিংহ বলেন, আমি জানি না। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) জানেন।
৭ নম্বর ওয়াডের্র ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর দোষ স্বীকার করে বলেন, আমার ভুল হয়েছে, এতো সব বুঝিনি আমি। আগামীতে এ ধরনের সমস্যা হবে না।
আদমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন বলেন, অনিয়ম পছন্দ করি না আমি। মেম্বারদের তালিকায় কিছুটা স্বজনপ্রীতি হয়েছে। তাদের নাম কেটে দেওয়া হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী কার্ডে স্বাক্ষর করেছি। সেখানে কারা সচ্ছল তা জানি না। টিসিবির তালিকায় উপ-সচিবের বাবার নামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। এ রকম হয়ে থাকলে খোঁজ নিয়ে কার্ড বাতিল করা হবে।