1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
দু ‍দিনের বৃষ্টিতে যশোর পৌরসভা বন্যাকবলিত (ভিডিও সহ) - চ্যানেল দুর্জয়
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন
সদ্যপ্রাপ্ত :
পাবনার সুজানগর খাদ্য বিষক্রিয়ায় শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিএফইউজে ও জেইউজের তীব্র নিন্দা এক বিভাগ বাদে সারাদেশে চতুর্থ দফায় ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি নিখোঁজের দুইদিন পর নদী থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা প্রণব কুমার বড়ুয়া মারা গেছেন দক্ষতা ছাড়া শুধু জ্ঞান অর্জন করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো: শিক্ষামন্ত্রী রিকশাচালকদের মাঝে ৩৩ হাজার ছাতা বিতরণ ডিএনসিসির রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা বরদাস্ত করবো না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী চৌগাছার সাপেকাটা রোগীর যশোর সদর হাসপাতালে মৃত্যু যশোরে হিট স্ট্রোকে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু

দু ‍দিনের বৃষ্টিতে যশোর পৌরসভা বন্যাকবলিত (ভিডিও সহ)

  • প্রকাশিত : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ড্রেনের নোংরা পানি ঢুকে পড়েছে বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। ড্রেনগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে। এতে শহরের বিভিন্ন রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পথচারীরা। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার ঘাটতি ও শহরের পানি নিষ্কাশনের যে ড্রেন তা পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে নাগরিকদের অভিযোগ।

যশোর বিমানবাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যায় মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়। পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মাঝারি ও শুক্রবার ভোর রাতে ভারি বর্ষণে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। গত দুই দিনে ১৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে বুধবার ৩৫ মিলিমিটার ও বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত শহরের অনেক এলাকায় পানি জমে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের অন্তত ১৫টি সড়কে পানি জমে আছে। খড়কি এলাকার শাহ আবদুল করিম সড়ক, শহরের পিটিআই, নাজির শংকরপুর, খড়কি রূপকথা মোড় থেকে রেললাইন, বেজপাড়া চিরুনিকল, মিশনপাড়া, আবরপুর ক্যান্টনমেন্ট, বিমানবন্দর, ষষ্ঠীতলাপাড়ার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলমগ্ন এসব সড়কে ছিল হাঁটুপানির প্রবল স্রোত। এসব সড়কের দুই পাশের নালার ময়লা-আবর্জনায় ভরা নোংরা পানি উপচে পড়ে সড়কে। সড়ক ছাপিয়ে সেই পানির ঢল ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও।

ভারি বর্ষণে জলমগ্ন হয় পৌর এলাকার ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড। বসত ঘরে পানি ঢুকে যায়। ঘরে ও বাইরের জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে আছেন ওই ওয়ার্ডের মানুষেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও শহরের সমস্ত পানি নিষ্কাশনের পথ যে ড্রেন তা পরিষ্কার করে না পৌরসভা, সে কারণেই এ ভোগান্তি। শহরের শংকরপুর এলাকার গোলাম মাজেদ বলেন, যশোর শহরের পানি নিষ্কাশন হয় শহরের দক্ষিণ পাশের বিল হরিণায়। সেখান থেকে মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে পানি বেরিয়ে যায়। কিন্তু গত চার বছর ধরে বিল হরিণায় পানি নিষ্কাশনের যে ড্রেন তা পরিষ্কার করে না পৌরসভা।

পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহেদ হোসেন নয়ন বলেন, এলাকাবাসীসহ তিনি নিজে পৌর মেয়রের কাছে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। কিন্তু ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে পৌরসভা এ দুর্ভোগ নিরসনের স্থায়ী পরিকল্পনা নিচ্ছে। শহরে খড়কি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শাহ আবদুল করিম সড়কের এম এম কলেজের দক্ষিণ ফটক (গেট) থেকে খড়কি মোড় হয়ে পীরবাড়ি, কবরস্থান ও আপন মোড়ে বৃষ্টির পানি জমেছে। ওই এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় মাইক্রোবাসের চাকা পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পায়ের জুতা হাতে নিয়ে অনেককে হেঁটে চলাচল করতে দেখা যায়।

ওই এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন মুকুল নামে এক এনজিও কর্মকর্তা বলেন, খড়কি এলাকাটা তুলনামূলক নিচু। রাস্তার পাশে পয়ঃনিষ্কাশনের নালা দিয়ে অন্য এলাকার পানি আসে। ওই পানি বের হতে পারছে না। পৌরসভার কাছে পানিনিষ্কাশন ও সড়ক সংস্কারের দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয় না।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের ভেতর দিয়ে ভৈরব ও মুক্তেশ্বরী নামে দুটি নদ-নদী বয়ে গেছে। এর মধ্যে ভৈরব নদ দিয়ে শহরের উত্তরাংশ ও মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে শহরের দক্ষিণাংশের পানি নিষ্কাশিত হয়। কিন্তু গত ১০ বছর শহরের দক্ষিণাংশের পানি মুক্তেশ্বরী নদী দিয়ে নামতে পারছে না। পয়ঃনিষ্কাশন নালার মাধ্যমে শহরের পানি হরিণার বিল দিয়ে মুক্তেশ্বরী নদীতে যেত। কিন্তু ২০১০ সালে হরিণার বিলে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। এরপর আশপাশে আরও অনেক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এতে বিল দিয়ে পানি আগের মতো নিষ্কাশিত হতে পারছে না। ওই পানি বের করার জন্য খালের মাধ্যমে মুক্তেশ্বরী নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। কিন্তু পৌরসভা গত ১০ বছরেও সেই উদ্যোগ নিতে পারেনি।
পৌরসভাভুক্ত অনেক সড়কের অবস্থাই এখন নাজুক। এক দিন বৃষ্টি হলেই সড়কের অবস্থাগুলোতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনসাধারণের। অধিকাংশ সড়কের বিটুমিন উঠে গেছে। সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার তথ্যমতে পৌর শহরে এমন রাস্তার সংখ্যা প্রায় অর্ধশতাধিক।

শহরের রেল বাজারে শুক্রবার সকালে দাঁড়িয়ে ছিলেন দুই কলেজ শিক্ষার্থী। তারা শহরের খড়কি এলাকায় একটি ছাত্রাবাসে থাকেন। তারা বলেন, ‘আধা ঘণ্টা ধরে রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে আছি, রাস্তা জলমগ্ন হওয়ায় কেউ খড়কি এলাকায় যেতে রাজি হচ্ছেন না।’ কেউ রাজি হলেও ৩০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা চাই। শমশের আলী নামে এক রিকসা চালক বলেন, খড়কি এলাকায় হাঁটু পানি। রাস্তার সব খানাখন্দ, গর্ত। বেশিরভাগ রাস্তা এত খারাপ যে ঠিকমত রিকশা চালানো যায় না। এ মাসে দু’বার টায়ার-টিউব বদলাইছি। তাই ওই দিকে যাবো না।

এই বিষয়ে যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশের মুঠোফোনে কয়েকদফা যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তবে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য কাজ চলছে। দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শরীফ হাসান বলেন, শহরবাসীর অসচেতনতার কারণেও নালার পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তা ও নালা সংস্কার ও নির্মাণের জন্য এমজিএসপি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, মুক্তেশ্বরীর সঙ্গে সংযোগ খাল স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছি। এ বিষয়ে এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ কাজটি শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।

এদিকে এসময়ের বৃষ্টিকে আশীর্বাদ হিসেবে দেখছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত যে বৃষ্টি হয়েছে। সেটি সামগ্রীকভাবে ফসলের জন্য ভালো। বিশেষ করে আমন ধানের ক্ষেত্রে এই ধরণের পানি বড় আশীর্বাদ। তাছাড়া এই বৃষ্টি পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য খুবই দরকারি। আগামী বোরো মৌসুমে পানির স্তর স্বাভাবিক রাখবে এই বৃষ্টির পানি। তবে এই বৃষ্টি যদি আগামী ৩-৪ দিন বা তারও বেশি স্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে সবজির জন্য কিছু ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার (সন্ধ্যা ৭:৫৪)
  • ২৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২০শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
333
3287118
Total Visitors