আসিফ মাহমুদ নয়ন , কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের নির্বাচন। এ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন সংগঠনের সাবেক সমন্বয়ক ও বর্তমান এনসিপি নেতা লুৎফর রহমান, ওয়াহিদ উজ্জামান ও মোহাম্মদ রাকিব।
তবে এই নির্বাচন প্রক্রিয়া ও কমিশনের গঠনে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিভাগের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস. এম. সুইট, কুষ্টিয়ার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম (মাগুরা), আবু হুরায়রা (ঝিনাইদহ) এবং আ. রহমান মেহেদী (নড়াইল)।
নেতারা তিনটি মূল দাবি উপস্থাপন করেন:
১. নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন না করতে পারেন।
২. জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে প্রার্থী হওয়ার পাশাপাশি ভোটাধিকারও দিতে হবে।
৩. যেসব কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, তাদেরও প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, “আগস্ট বিপ্লবে যে সাহসী তরুণরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সংগঠনের রূপরেখা উপেক্ষা করে অনেকেই প্ল্যাটফর্ম ত্যাগ করেছেন। এরপর একটি গোষ্ঠী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই সার্বজনীন প্ল্যাটফর্মকে কলঙ্কিত করতে চেয়েছে।”
চৌগাছা থানার বিতর্কিত ওসি পায়েলের অন্যতম সহযোগী আশরাফ বরখাস্ত
তারা আরও বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে গড়ে ওঠা এই ছাত্র আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাব ছাড়াই পরিচালিত হওয়া উচিত। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক সংযোগ থাকা নেতাদের অংশগ্রহণ ও প্রভাব একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
নেতারা অভিযোগ করেন, “যদিও গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা অনেক জেলা আহ্বায়ককে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়নি। এছাড়া, যেসব প্রাথমিক ১৫৮ জন সমন্বয়ক এখনো আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তারাও প্রার্থিতা ও ভোটাধিকারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন—যা স্পষ্টতই স্বার্থান্বেষী ও বিভেদ সৃষ্টিকারী মনোভাবের প্রকাশ।”
সংগঠনটিকে একটি অরাজনৈতিক, নিরপেক্ষ, ও ফ্যাসিবাদমুক্ত ছাত্র প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নেতারা বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল ও নার্সিং ইনস্টিটিউট—সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এই আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষে নেতারা জুলাই বিপ্লবে শহীদ, আহত ও পঙ্গু মানুষদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ, এবং বিপ্লবের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানেরও দাবি জানান।
Leave a Reply