কখনো সংবাদ কর্মী, কখনো পুলিশ, কখনো কলগার্ল, কখনো মানবধিকার কর্মী সেজে নানা যশোরের বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো চৌগাছার বহুল আলোচিত মাদক সম্রাজ্ঞী বলে খ্যাত লিপি খাতুন ২৬ বোতল ও তরল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশ আজ মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় পৌর সদরের তরিকুল ইসলামের বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ীর মালিকসহ আরো ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের মাধ্যমে পুলিশের কাছে খবর আসে মাদক সম্রাজ্ঞী লিপি খাতুন ও কয়েকজন সহযোগি পৌর সদরের তরিকুল ইসলামের বাড়ীতে অবস্থান নিয়ে মাদকের কারবার চালাচ্ছে। খবর পাওয়ার পর থানার অফিসার ইনচার্জ রিফাত খান রাজীবের নেতৃত্বে এস আই গিয়াস উদ্দীন, এস আই বজলুর রহমান, এসআই রাজেশসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে হাজির হয়।
এ সময় তরিকুলের বাড়ী থেকে ২৬ বোতল ফেনসিডিল ও তরল ফেসনিডিলসহ লিপি খাতুনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। আটক লিপি উপজেলার মাশিলা গ্রামের হানেফ আলীর মেয়ে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ীর মালিক নজরুল ইসরামের ছেলে তরিকুল ইসলাম, ঝিনাইকুন্ড গ্রামের টিটো, চৌগাছা বিশ্বাস পাড়ার হিরা ও রুম্মান নামের এক মাদক ব্যবসায়ী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
লিপি খাতুনের আটকের বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ রিফাত খান রাজীবের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আটক লিপি খাতুন মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে যশোর সদসসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। এ বিষয়ে পলাতকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়া যারা পলাতক তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। প্রসঙ্গতঃ মাদক সম্রাজ্ঞী বলে পরিচিত লিপি খাতুন যশোর জেলার পরিচিত মুখ। তার লাইফ স্টাইল দেখে অনেকে হতবাকও হয়েছেন। অধিকাংশ সময় তাকে নিউ মডেলের মটরবাইক চালাতে দেখা যায়। কখনো জিন্স প্যান্ট ও সর্ট গেঞ্জি পরে, কখনো পাজামা পাঞ্জাবি পরে মটরবাইক চালায় লিপি। কখনো নিজেকে গণমাধ্যম কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে বিভিন্ন স্থানে তার বেপরোয়া চলাফেরা লক্ষনীয়। এমনকি বিমানবন্দরে প্লেনে বসে বা প্লেনের সামনে থেকে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে তার ব্যক্তি ইমেজ দেখানোর চেষ্টা করার নজিরও রয়েছে। কয়েকমাস আগে বিষয়টি যশোরের গণমাধ্যম কর্মীদের ভাবিয়ে তোলে। ফলে এ বিষয়ে ব্যাপক খোঁজখবর নেয়া হলে লিপি খাতুনের বিষয়ে নানা তথ্য উঠে আসে। পরবর্তীতে যশোর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে।